আর্টিকেল লেখার নিয়ম | আর্টিকেল লেখার কৌশল

আর্টিকেল লেখার নিয়ম- আমরা অনেকে আছি যারা কিনা ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে চাই। এ জন্য আমাদের দরকার হয় ওয়েবসাইট। আর এ ওয়েবসাইটে আমরা যখন কোন কিছু লিখি তখন সেটা দর্শকদের কাছে পৌছায়। তাই ব্লগিং এর জন্য লেখালেখি করার অভ্যাস তৈরি করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লেখাটা যদি দর্শক ভালোভাবে বুঝতে না পারে তাহলে আমাদের কন্টেন্ট না পড়েই চলে যাবে। তাই আমাদের কে সহজ, বোধযোগ্য আর্টিকেল লিখতে হবে যাতে করে দর্শক খুব সহজে আমাদের লেখাটি পড়ে তার কাংক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে পারে।  যদি একটি গুছালো, সুন্দর ও ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল লেখার নিয়মগুলো মেনে চলতে পারেন। । আমাদের গুগল নিউজ অনুসরন করুন।

আর্টিকেল লেখার নিয়ম

আমরা বাংলা অথবা ইংলিশ যে কোন আর্টিকেল লিখি না কেন আর্টিকেল লেখার নিয়ম কিন্তু একই রকম। কেউ বাংলা নিয়ে কাজ করে আর কেউ ইংলিশ আর্টিকেল নিয়ে কাজ করে এ হলো তফাত। আর্টিকেল লিখার বেসিক নিয়মগুলো একই রকম। শুধু ব্যাক্তি ভেদে তার মেধা অনুযায়ী লেখনিটা ভিন্ন হবে। তবে কেউ ইচ্ছে করে একদিনেই কেউ এক্সপার্ট হতে পারবে না, আস্তে আস্তে আর্টিকেল লেখার উপর সময় দিলে একদিন অবশ্যই ভালো মানের আর্টিকেল রাইটার হতে পারবে।

আর্টিকেল লেখার নিয়ম | আর্টিকেল লেখার কৌশল


আমরা আজকে আর্টিকেল লিখার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ নিয়ে আলোচনা করবো। আপনারা যদি একেবারে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে ধাপগুলো আপনার খুবই উপকারে আসবে। 

আর্টিকেলের জন্য ভালো একটি বিষয় নির্বাচন

আর্টিকেল লেখার জন্য সবচেয়ে ‍গুরুত্বপূর্ন জিনিস হলো একটা সুন্দর বিষয় নির্ধরন করা। আপনারা যারা আজকে আমার এ লেখাটি পড়ছেন তারা অবশ্যই কোন না কোন একটি বিষয়ের উপর কন্টেন্ট লিখবেন বলে ঠিক করে নিয়েছেন। একেকজন একেকধরনের জিনিস পছন্দ করে আর তার উপর লিখতে ভালোবাসে। যেমন- কেউ খেলাধুলা পছন্দ করে, কেউ গান পছন্দ করে, কেউ ইসলামী বিভিন্ন বিষয়গুলো পছন্দ করে। যে যে বিষয়ে খুবই এক্সপার্ট সে বিষয় নিয়ে লেখাটা তার সবচেয়ে ভালো হবে। তবে লেখার আগে অবশ্যই আপনি জানা সত্বেও বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে হবে। সে বিষয়ের উপর আপনাকে অন্য কারো লিখনি পড়তে হবে। আপনি কয়েকটি বই পড়ে আপনার লেখার বিষয়ে ভালো একটি ধারনা তৈরি করে ফেলতে পারেন। অথবা উক্ত বিষয়ের উপর একটি ভিডিও দেখে নিতে পারেন। অর্থাৎ আপনি যে বিষয় নিয়ে লিখেন না কেন বিষয়টি যেন খুব ভালো মানের হয়, তার উপর লক্ষ রাখবেন।

আর্টিকেল টাইটেল | আর্টিকেল লিখে স্বাবলম্বি হওয়ার উপায় 

যে বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখবেন, ভাবনা চিন্তা করে তার একটা সুন্দর টাইটেল নির্বাচন করবেন। কারন কোন একটি পোস্ট পড়ার জন্য টাইটেল খুবই প্রয়োজনীয়। বেশির ভাগ পাঠক যদি টাইটেল পছন্দ না হয় তাহলে পোস্ট পুরোটা পড়তে চায় না। তবে টাইটেল বেশি বড় করবেন না। ৬ থেকে ১০ শব্দের ভিতরে যেন টাইটেল হয় তার উপর খেয়াল রাখবেন।

সূচিপত্র তৈরি করা

আপনি যে বিষয়ের উপর কনটেন্ট লিখবেন তার একটি সূচিপত্র তৈরি করুন। তাহলে আপনার সুবিধা হবে আপনি কোন বিষয়ের পর কোন বিষয় লিখবেন তা আর ভূল হবে না। আর সূচিপত্র থাকলে আপনার লেখাটা পাঠকদের খুব সহজে বোধগম্য হবে। আবার যদি আপনি সূচিপত্রে লিংক তৈরি করে দেন তাহলে তো আরো ভালো হয়। কোন পাঠক যদি চায় তাহলে সূচিপত্রের হেডিংগুলোতে চাপ দিলেই তার কাংক্ষিত যায়গায় চলে যেতে পারবে। যেমন- আমি আমার স্কুল নিয়ে একটি রচনা লিখতে চাই। তাহলে সূচিপত্র কেমন হবে
  • সূচনা
  • স্কুল পরিচিতি
  • স্কুলের অবকাঠামো
  • আমাদের স্কুলের সুবিধা সমূহ
  • আমাদের স্কুলের শিক্ষক পরিচিতি
  • স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীদের অর্জনসমূহ
  • আমাদের স্কুলের খেলার মাঠ
  • স্কুলের অডিটোরিয়াম ক্যাপাসিটি
  • আমাদের স্কুলের মসজিদের অবস্থান
  • উপসংহার।
এভাবে যদি আমরা একটা সূচিপত্র তৈরি করি তাহলে আমাদের কন্টেন্টটা কিন্তু দেখতে খুব সুন্দর হবে এবং যারা পাঠক তারাও বিষয়টি পড়ে মজা পাবে।

সূচনা সংক্ষিপ্ত করা

আপনি যে বিষয়ের উপর কনটেন্ট লিখবেন তার উপর সূচনা খুব অল্প কয়েক লাইনের ভিতরে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখবেন। কারন সূচনা যদি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষন করে তাহলে পাঠক ভিতরের অংশগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়বে। ২০০ থেকে ৩০০ শব্দের ভিতরে সূচনা লেখার চেষ্টা করবেন। আর সূচনার ভেতরে অবশ্যই আপনার আর্টিকেলের শিরোনামটি একবার হলেও ব্যবহার করার চেষ্টার করবেন। যা গুগোলে আপনার আর্টিকেল দ্রুত র‌্যাংক করার হারকে অনেক বৃদ্ধি করবে। আর্টিকেল লেখার নিয়ম হিসাবে এ বিষয়টি খুব ভালো ভাবে নজরে রাখবেন।

প্যারাগ্রাফ আকারে কন্টেন্ট লেখা

আপনি সূচিপত্র অনুযায়ী যে বিভাগ লেখেন না কেন অবশ্যই প্যারাগ্রাফ আকারে লিখবেন। যদি আপনি অনবরত লিখেই যান তাহলে পাঠকদের বিরক্তির কারন হতে পারে। আর প্যারাগ্রাফ করে যদি লিখেন তাহলে সুবিধা হলো অনেকে তো আর ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে পড়ে না। তাই যতটুকু পড়া হলো সে সুন্দর করে সেই প্যারা পর্যন্ত দাগ দিয়ে অথবা চিহ্নিত করে রাখতে পারবে এতে করে পরবর্তিতে তার পড়তে সুবিধা হবে।

লাইন গ্যাপ দিয়ে আর্টিকেল লেখা

আমাদের মাঝে অনেকে আছে যাদের লেখা কন্টেন্ট অনেক ছোট হয় তাই তারা বিষয়টা বড় করে দেখানোর জন্য লাইনের মাঝে বড় বড় গ্যাপ প্রদান করে, এটা মোটেও করা যাবে না। আপনার যদি একটি প্যারাগ্রাফ অনেক বড় হবে মনে হয় তাহলে আপনি ৪/৫ লাইন পর পর একটি গ্যাপ দিতে পারেন। তবে এই গ্যাপ অবশ্যই ১ লাইনের বেশি হবে না। বিশেষ করে বাংলা কন্টেন্ট লিখার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি মনে রাখবেন।

কন্টেন্ট ফরমেট ঠিক করা

পুরো কনটেন্ট লেখা হয়ে গেলে লাইনের আঁকাবাঁকা যায়গা গুলো সমান করে নিতে হবে। ছবি কোন স্থানে বসাতে হবে। ছবির ফরমেট কেমন হবে, এগুলো ঠিক করে নিতে হবে। কন্টেন্টের সাথে মিল রেখে ছবি ব্যবহার করতে হবে।

ফোকাস কিওয়ার্ড এর সংখ্যা বাড়ানো

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ফোকাস কিওয়ার্ড কি? ফোকাস কিওয়ার্ড হলো এমন একটি বিষয় যা লিখে যারা পাঠক আছে তারা উক্ত বিষয়ে সার্স করে গুগোলে এসে। যেমন আমাদের আজকের বিষয় হলো “আর্টিকেল লেখার নিয়ম” অনেকে আবার সার্স করতে পারে “বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম” ইত্যাদি। এরুকম একটি বিষয়ে মানুষ যেগুলো জিনিস সার্স করতে পারে সেগুলো আপনার কন্টেন্টের ভিতরে ১০ থেকে ১২ বার ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

ইন্টার লিংকিং করে ভিউ বাড়ানো

আপনি আপনার কন্টেন্টের ভিতরে নিদৃষ্ট দূরুত্বে অন্য পোস্টের লিংক সংযুক্ত করতে পারেন। যখন পাঠক একটি বিষয় পড়তে আসবে তখন মনের অজান্তে তার লিংকিং করা পোস্টাও ভালো লাগতে পারে এতে করে সে আপনার উক্ত পোস্ট পড়তে পারে। আর আপনারো ভিউ বেড়ে যাবে, ইনকাম বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রতি পোস্টে অন্তত ২ থেকে ৩ জায়গায় আপনি যে বিষয়গুলো পাঠকের কাছে র‌্যাংক করাতে চাচ্ছেন সেগুলো লিংকিং করে দিতে পারেন।
আর্টিকেল লেখার নিয়ম | আর্টিকেল লেখার কৌশল

এক্সটার লিংকিং করে ভিউ বাড়ানো

আপনার যদি ওয়েবসাইটি নতুন হয়ে থাকে তাহলে আপনি কোন প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পোস্ট আপনার ওয়েবসাইটের পোস্টগুলোতে সংযুক্ত করতে পারেন। এতে করে ভিজিটর তার ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসার সম্ভবনা বেড়ে যাবে। আর আপনার ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটররাও প্রতিষ্ঠিত একটি ওয়েবসাইট পাবে। তবে অন্য কারো পোস্ট আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে চাইলে উক্ত ব্যাক্তির অনুমতি নিয়ে নিবেন। না হলে সে ব্যক্তি আবার কপিরাইট ইশু দিয়ে মামলা করতে পারে। তাই এ বিষয়টি মাথায় রেখে এক্সটার লিংকিং করার চেষ্টা করবেন।

ইউনিক আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করুন

আপনি আপনার ওয়েবসাইটে যত কিছু লিখে পাবলিস্ট করেন চেস্টা করবেন সবকিছু যেন নিজের লেখনি হয়। তবে আপনি তো আর সবকিছু জানেন না তাই অনেক বেশি গবেষনা করে আপনার মত করে নতুন অঙ্গিকে লেখার চেষ্টা করুন, এতে করে আর কপিরাইট ইশু আসবে না। বিভিন্ন প্লাগরিজম চেকার দিয়ে চেক করে নিবেন আপনার কন্টেন্টটি ১০০% ইউনিক কিনা। আপনি যদি উপরের সকল বিষয় মেনে নিজের মত করে কনটেন্ট লিখেন আশাকরি আপনার আর্টিকেল অবশ্যই ইউনিক হবে।

h1,h2,h3 এর ব্যবহার বাড়ানো

আমরা যখন একটি কন্টেন্ট লিখি তখন প্যারাগ্রফের মাধ্যমে লিখি। উক্ত লিখনিতে আমরা যদি প্রধান যে শিরোনাম আছে সেগুলোতে যদি হেডিং হিসেবে আমরা মেজর হেডিং, হেডিং, সাবহেডিং- h1,h2,h3 ইত্যাদি ব্যবহার করি তাহলে গুগল আমাদের লেখাগুলো ভালোভাবে বুজতে পারবে। দর্শক যেগুলো সার্স করবে আপনার লেখার হেডিংগুলোতে যদি এমন শব্দ থাকে তাহলে গুগল আপনার লেখাগুলোকে দর্শকদের সামনে নিয়ে আসবে এতে করে আপনার ওয়েবসাইটের পোস্টের ভিউ বাড়বে।

মানসম্মত ছবির ব্যবহার 

প্রতিটি কন্টেন্টে ছবি ব্যবহার আপনার পোস্টের সৌন্দয্য বৃদ্ধি করে। ছবি দেখলে আমরা পুরো বিষয়ের সারমর্ম বুঝা যায়। তাই বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত ছবি ব্যবহার করবেন যাতে করে যারা পাঠক আসবে তারা যেন ছবির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আপনার পোস্টটি পড়ে। তবে ওয়েবসাইটে ছবি ব্যবহারের সিমাবদ্ধতা হলো অবশ্যই আপনি ছবিটি ওয়েবপি ফরমেটে কনভার্ট করে তারপর আপনার কন্টেন্টে ব্যবহার করবেন। প্রতিটি ছবির সেটিংস থেকে টাইটেল হিসাবে আপনি আপনার আর্টিকেলের টাইটেল লিখে দিবেন। এতেকরে আমরা অনেকে আছি একটা বিষয় গুগলে সার্স করে ছবির মাধ্যমে দেখি। তাহলে উক্ত পোস্ট করা ছবির মাধ্যমে পাঠক আপনার ওয়েবসাইটে বেশি করে আসবে।

শেষকথাঃ

এতক্ষন ধরে আপনাদের সামনে আর্টিকেল লেখার নিয়ম নিয়ে অনেক কিছু আলোচনা করা হলোআপনারা যদি উপরের নিয়মগুলো ফলো করে একটি কনটেন্ট  লিখেন তাহলে আপনাদের পোস্টগুলো অবশ্যই র‌্যাংক করবে ইনশাআল্লাহ।- আপনারা সকলে ব্লগিং করে ভালো কিছু করেন এই প্রত্যাশা করছি। আপনাদের যদি আর্টিকেল লেখার নিয়ম নিয়ে কোন প্রকার প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদের জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

আরো পড়ুনঃ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উপায় কী এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url