আমরা হয়তো আর্টিকেল নিয়ে কাজ করার কথা অনেকে ভাবি। কিন্তু পরক্ষনে এটাও ভাবি কিভাবে লিখলে আমাদের পোস্টটি অত্যন্ত সুন্দর হবে। আমি কি আসলে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আর্টিকেল লিখতে পারব কিনা? যদি না পারি তাহলে আমার আর্টিকেল লিখাটা বেকার হয়ে যাবে। আবার সময়টাও বৃথা যাবে। এগুলো ভাবতে ভাবতে আমরা অনেক সময় নষ্ট করে ফেলি। আমাদের মনে রাখতে হবে কোন কাজ একেবারে সহজ না। আপনাকে অবশ্যই শ্রম দিয়ে সফলতা অর্জন করতে হবে।
আজকে SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার ১০টি উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। SEO এর পূর্ন রুপ হলো “সার্স ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন”। আজকের পোস্টটি আপনাকে গুগল ফাস্ট র্যাংকি এ আনতে অনেক সহায়তা করবে। যারা আর্টিকেল লিখে নিজের পোস্টকে র্যাংকে আনতে চান আজকের এই ১০টি উপায় আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। আশা করি পুরো পোস্ট পড়বেন, আপনার সময় বৃথা যাবে না। আমাদের গুগল নিউজ অনুসরন করুন।
১। কিওয়ার্ড রিসার্স করে টার্গেট কিওয়ার্ড বের করা
আমরা কোন বিষয় নিয়ে লেখবো সেটা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করতে হবে হঠাৎ করে একটা জিনিস ভাবলাম আর লিখে ফেললাম এটা করলে কিন্তু হবে না। আপনাকে প্রচুর পরিমান বই ঘাটাঘাটি করতে হবে। বিভিন্ন পিডিএফ ফাইল পড়তে হবে। আপনার বিষয় নিয়ে কে কেমনভাবে আলোচনা করলো তার উপর একটা পূর্ণ ধারনা এমনভাবে নিতে হবে যে, আপনি এখন যেটা লিখবেন তা সবার চেয়ে ভালো মানের হবে। এ জন্য আপনাকে বিভিন্ন কিওয়ার্ড রিসার্স টুল নিয়ে কাজ করতে হবে, যেখানে টুলস আপনাকে বলে দিবে আপনি কোন ধরনের কিওয়ার্ড বাছাই করবেন। তবে এটা মনে রাখবেন যারা নতুন কনটেন্ট রাইটার লো-ধরনের কিওয়ার্ডগুলো বাছাই করে নিবেন। কারন এখানে প্রতিযোগী কম তাই আপনি দ্রুত সেখানে যায়গা করে নিতে পারবেন। আপনি গুগলে সার্স করলে অনেক কিওয়ার্ড রিসার্স টুলস পাবেন আপনার যেটা ভালো মনে হবে আপনি সেটা নিয়ে কাজ করবেন।
২। সুন্দর টাইটেল নির্বাচন-মেটা টাইটেল
SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার অন্যতম একটি বিষয় হলো সুন্দর টাইটেল নির্বাচন করা। টাইটেলের উপর নির্ভর করে কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ার সম্ভবনা অনেক বেড়ে যাবে। আমরা যখন একটা বই কিনতে যাই তখন প্রথমে বইয়ের নামটি দেখি। যদি আমাদের বইয়ের নাম পছন্দ হয় তখন বইয়ের ভিতর লেখক কি লিখলো তা দেখার জন্য আমরা বইটি কিনে থাকি। যদিও অনেক সময় বইটি পড়ে পরে আর কোন প্রকার মজা পাওয়া যায় না। ঠিক তেমনভাবে আমরা যখন আর্টিকেল লেখবো আমাদের লেখনির পুরো সারমর্ম যেন টাইটেলে থাকে তার উপর খুব যন্তবান হতে হবে। তবে মনে রাখবেন টাইটেল যেন ছোট হয়, ৪/৯ শব্দের ভিতরে রাখার চেষ্টা করবেন।
৩। ফিচার ইমেজের ব্যবহার
আমরা যখন আর্টিকেল লেখি তখন প্রতিটি পোস্টে থামনাইল হিসাবে একটা ইমেজ ব্যবহার করি যেটা আমাদের পোস্টের শুরুতে থাকে এটাকে বলা হচ্ছে ফিচার ইমেজ। এই ফিচার ইমেজ অবশ্যই কন্টেন্টের সাথে সামঞ্জস্য করে তৈরি করতে হবে। আমরা যানি ছবি কিন্তু অনেক কিছু প্রকাশ করে। অনেক সময় বলা হয় ছবি কথা বলে। তাই ফিচার ইমেজের ছবিটি এমন সুন্দর করে তৈরি করতে হবে যাতে করে ছবি দেখে ভিতরের লেখা পড়তে মন চায়। তবে ছবিটি . png টাইপের যেন হয় তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ছবির যে কোন একদিকে একটি ছোট পিকচার এবং পাশে আপনার পোস্টের টাইটেল লিখবেন। এতে করে আপনার ফিচার ইমেজ দেখে পাঠক বুঝতে পারবে এটা তার কাংঙ্খিত পোস্ট কিনা।
৪। লেভেল নির্বাচন-SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়ম
হঠাৎ ইচ্ছে হলো আর একটা আর্টিকেল লিখে ওয়েবসাইটে পাবলিস্ট কিন্তু করাই যায়। কিন্তু পোস্ট পাবলিস্ট করার আগে সিলেক্ট লেভেল নামে একটি অপশন আছে। আপনি কি রিলেটেড কনটেন্ট পোস্ট করবেন তার উপর মিল রেখে আপনি একটি লেভেলের নাম দিবেন। আর এ রিলেটেড যত কনটেন্ট আপনি পোস্ট করবেন তা এই লেভেলে রাখার চেষ্টা করবেন। এতে করে পাঠকের একই ধরনের পোস্ট আপনার ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবে একই লেভেলে। তাই পোস্ট পাঠকের কাছে বেশি হারে পৌছানের জন্য লেভেল অবশ্যই মানানসই করে দিবেন।
৫। সঠিক পারমালিং ব্যবহার করা
পারমালিং বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ SEO এর জন্য। আমরা যেহেতু ব্লগে লেখালেখি করি এতে করে ওয়ার্ডপ্রেসের মত আমাদের আলাদা কোন সফটওয়ার নেই। তাই যাই করি না কেন খুব সাবধানে করা উচিত সার্স ইঞ্জিনে ফাস্টে আসার জন্য। আমরা অনেক সময় পোস্টের টাইটেল বাংলায় দিয়ে থাকি। এখনো যেহেতু আমাদের বাংলাভাষা গুগলে পারমালিংকে এড করে নাই তাই অনেকে না বুঝে পোস্ট পারমালিংক না দিয়ে পোস্ট করে ফেলে এতে করে তার কনটেন্টের যখন লিংক তৈরি হয় তা ব্লগ পোস্ট আকারে আমরা দেখতে পাই। তাই অনেক সময় আমাদের পোস্ট গুগলে ইনডেক্স হয় না। আজকে কয়টি পদ্ধতি বলব যা অনুসরন করে পারমালিং লিখলে আপনার পোস্ট দ্রুত গুগলে ইনডেক্স হবে।
- অবশ্যই কাস্টম পারমালিংকের মাধ্যমে লিং তৈরি করতে হবে।
- যদি বাংলা কনটেন্ট লিখেন তাহলে কাস্টম অপশনে গিয়ে বাংলিশ ফরমেটে আপনার লেখাটি টাইপ করুন।
- পারমালিংকে আপনার ফোকাস কিওয়ার্ড যেটা পুরো পোস্টে যত বেশি ব্যবহার করবেন এমন একটি নাম চয়েস করবেন, যেটা দর্শক বেশি করে সার্স করে।
- পারমালিংকের শব্দ ৩ থেকে ৫ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন।
- যদি আপনি বাংলিশ আকারে লিংক তৈরি করেন অবশ্যই একটি শব্দের মাঝে স্পেস না দিয়ে হাইফেন (-) ব্যবহার করুন। অনেকে আন্ডারস্কোর ( _ ) ব্যবহার করেন এটা হতে বিরত থাকবেন।
- পারমালিং তৈরির সময় স্টপ কিওয়ার্ড এ অবশ্যই খেয়াল রাখবেন () না ব্যবহার করার জন্য।
উদাহরন স্বরুপ নিচে একটি পারমালিং তৈরি করে চিত্র সহ প্রদান করা হলো।
৬। লোকেশনকে হাইলাইড করা
অনেক সময় আমরা এমন জিনিস পোস্ট করি যা নিদৃষ্ট এলাকার জন্য। যদি এমন কখনো হয় যে আমি শুধুমাত্র একটি স্থানের লোকজনকে উদেশ্য করে আপনি পোস্ট লিখেন তাহলে যদি আপনি লোকেশনের যায়গায় উক্ত লোকেশন সেট করে দেন তাহলে শুধুমাত্র সে যায়গার লোকজন আপনার পোস্টটি দেখতে পাবে। যেমন- আমি বাংলায় কনটেন্ট তৈরি করি, কিন্তু আমরা যদি লোকেশন আমেরিকা দিয়ে দেই তাহলে তো আমেরিকার লোক আমার বাংলা লেখা বুঝতে পারবে না, তাই যে ভাষায় কনটেন্ট তৈরি করবেন সেই লোকেশন সিলেক্ট করে দিবেন। তবে এটা না সিলেক্ট করলেও চলবে কারন গুগল আপনার লেখা দেখে সেই এলাকার লোকের সার্সের উপর ভিত্তি করে তাদেরকে দেখিয়ে থাকে।
৭। মেটা ডেসক্রিপশন
মেটা ডেসক্রিপশন হলো আমরা যখন কোন একটি বিষয় লিখে গুগলে সার্স করি তখন টাইটেলের নিচে এক/দুই লাইনের এক ধরনের লেখা দেখতে পাই, এটাই মূলত মেটা ডেসক্রিপশন। পোস্ট করার আগে আমরা ভাবি যে কোন বিষয়গুলো লেখলে আমাদের পোস্টটি পাঠকের কাছে সহজে পৌছাবে। আমরা একটি বিষয় লক্ষ করবো আমরা যদি আমাদের কোন কিছু দরকার হয় তখন গুগলে সার্স করি। আর তখন গুগল আমাদেরকে অসংখ্য পোস্ট সামনে এনে দেয়। তখন আমরা খুজতে থাকি যে আমার চাহিদার সাথে কোন বিষয়টি মিলে যায়। সেট আমরা অবশ্যই টাইটেলের নিচের লেখা দেখে বুঝে থাকি। তাই মেটা ডেসক্রিপশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট র্যাংকিং এর জন্য। আমরা আমাদের পুরো পোস্টের সারমর্ম ১৫০ অক্ষরের মাঝে সার্স ডেসক্রিপশনে লিখে দিব যেটা আমাদের পরবর্তীতে টাইটেলের নিচে দেখাবে।
৮। পোস্টে লিস্ট, নম্বর এবং টেবিলের ব্যবহার
আমরা যদি ধারাবাহিক ভাবে কোন কিছু পড়তে থাকি কিছুক্ষন পর আমাদের খুবই বিরক্ত লাগবে। আমাদের মত সকলের একই কাজ হয়ে থাকে। তাই আমরা যদি লেখার মাঝে মাঝে বিভিন্ন পয়েন্ট আকারে লিখি অথবা নম্বর দিয়ে লিখি তাহলে দর্শকদের বুঝতে আর বাকি থাকবে না যে আমাদের আর কতটুকু পড়তে বাকি আছে। যেমন আমরা আজকে SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার ১০টি উপায় নিয়ে লিখলাম। আপনারা যারা পোস্টটি পড়ছেন অবশ্যই জানেন এখানে শুধুমাত্র ১০টি টিপস আলোচনা করা হয়েছে। আর আপনি পড়তে পড়তে বর্তমানে ৮ নম্বর টিপসে চলে আসছেন তাই আপনার অবশ্যই ধারনা থাকবে একটু পরেই কনটেন্ট শেষ হতে চলছে তাই আপনার বোরিং ফিল হবে না। আপনি এর সাথে টেবিল ও পিকচার এড করে আরো আপনার পোস্টকে অকর্ষনিয় করে তৈরি করতে পারেন।
৯। হেডিং সংযুক্ত করা
হেডিং বলতে এখানে প্রতিটি প্যারাগ্রাফের টাইটেল কে বোঝানো হয়েছে। আমরা জানি আমাদের পোস্টে কোন বিষয়টা বেশি গুরুত্বের সেটাকে আমরা মেজর হেডিং হিসাবে সিলেক্ট করতে পারি। আর যেটা এর চেয়ে একটু কম গুরুত্বের সেটাকে আমরা হেডিং হিসাবে সিলেক্ট করতে পারি। আর যেটা এর চেয়ে তুলনামুলক কম গুরুত্বের সেটাকে আমরা সাবহেডিং হিসাবে সিলেক্ট করতে পারি। এ হেডিং সংযুক্ত করার সুবিধা হলো যদি কেউ আমাদের এ হেডিংগুলো লিখে গুগলে সার্স করে সেটাও, তখন গুগল আমাদের ওয়েবসাইটের পোস্টটিকে তার সামনে হাজির করে দিবে। আশা করি সকলে বুঝতে পেরেছেন।
১০। একই ধরনের পোস্টগুলোর ইন্টারলিং করন
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে অনেকগুলো লেভেল নিয়ে কনটেন্ট লিখে থাকি। যদি আমরা রিলেটেড পোস্টগুলোকে প্রতিটি পোস্টে দুই তিন যায়গায় আলাদা করে আরো পড়ুুন এমন একটি লেখা লিখে উক্ত পোস্টটি লিংকিং করে দেই তাহলে আপনার দুইটি উপকার হবে। এক হলো আপনার আগের পোস্টতো গুগলে ইনডেক্স হয়েছে তাই ওখান থেকে নতুন পোস্টে ভিজিটর প্রবেশ করবে। এতেকরে গুগল আপনার নতুন পেস্টটিও গুগলে খুব দ্রুত ইনডেক্স করে নিবে। আর অপর সুবিধা হলো যেহেতু একটি পোস্টে আপনি আরো ২/৩টি পোস্ট দেখানোর সুজগ দিচ্ছেন পাঠকের যদি একটি পোস্ট ভালো লাগে সেখানে ক্লিক করে আপনার ভিউ বাড়বে। এর ফলে আপনার ইনকামের হার বেড়ে যাবে।
এতক্ষন যারা মনদিয়ে আর্টিকেলটি পড়েছেন আশাকরি আপনাদের কিছুটা হলেও উপকার হয়েছে। যদি কেউ কোন যায়গা বুঝতে না পারেন অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনার প্রশ্নের সহজ উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
উপায় কী এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url